ফেসবুক অ্যাভাটাইজিং কী
ফেসবুক এডভাটাইজিং হলো ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন প্রদানের একটি ব্যবস্থা। এটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্র্যান্ড, এবং ব্যক্তিদের তাদের টার্গেটেড দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করে। ফেসবুক বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যার প্রায় 3 বিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। ফলে, ফেসবুক এডভাটাইজিং ব্যবসার প্রচার এবং বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য একটি অত্যন্ত কার্যকর মাধ্যম।
ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজিং সাধারণত পিপিসি (পে পার ক্লিক) রুলস অনুসরন করে চলে। ফেসবুকে অ্যাড প্রদর্শীত হবার পর আপনার অ্যাডে প্রতি ক্লিক প্রতি চার্জ করা হয়ে থাকে।
ফেসবুক অ্যাডসের কাজ কি?
ফেসবুক অ্যাডস একই বৈশিষ্ট্যের গ্রুপের উপর নির্ভর করে পরিচালিত হয়। অর্থাৎ প্রথমে আপনাকে আপনার অ্যাডের জন্য প্রয়োজনীয় রিসার্চ করে নিতে হবে। কারণ অ্যাড রান করার আগে আপনাকে জানতে হবে আপনার কাস্টমার কারা হবে। এই ক্ষেত্রে আপনাকে সম্ভাব্য কাস্টমারের বয়স, রুচি, স্থান, ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করতে হবে।যখন উপরে বর্ণিত বিষয়গুলো সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শেষ হবে তখন বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য আপনি তৈরি হবেন। তো আপনার তৈরি করা বিজ্ঞাপন ফেসবুক অ্যাডের মাধ্যমে ৮ টি ফরম্যাট অনুসরণ করে প্রচার করা যাবে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ভিডিও অ্যাডঃ ভিডিও অ্যাড দেওয়ার জন্য আপনি GIF বা ভিডিও ফাইল ব্যবহার করতে পারবেন। ভিডিও ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত তথ্য সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায়। তাছাড়া ভিডিও অ্যাড আপনার সাথে কাস্টমারের সুসম্পর্ক গড়ে তোলে।
ইমেজ অ্যাডঃ ভিডিও এডিট করার মাধ্যমে কোন ডেটা যেমন আরও সাবলীলভাবে প্রদর্শন করা যায় ঠিক তেমনি ইমেজ ব্যবহার করেও উচ্চমানের বিজ্ঞাপন তৈরি করা যায়। ফেসবুকে আমরা প্রায়শই ভিডিও অ্যাডের সাথে সাথে স্টিল ইমেজ অ্যাড দেখে থাকি। এগুলো মূলত ফেসবুক অ্যাডসের ইমেজ অ্যাড ফরম্যাট ব্যবহার করে তৈরি করা।
ক্যারোসেল অ্যাডঃ ক্যারোসেল মূলত একটি চলতি ইমেজ বা ভিডিও স্লাইড। এখানে অনেকগুলো ইমেজ বা ভিডিও থাকে যা নির্দিষ্ট সময় পর পর অ্যানিমেশনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়। কোন প্রোডাক্ট যদি একটি ভিডিও বা ইমেজের মধ্যে বর্ণনা করা সম্ভব না হয় তবে ক্যারোসেল অ্যাডের মাধ্যমে সহজেই বিজ্ঞাপন দেওয়া সম্ভব।
মেসেঞ্জার অ্যাডঃ মেসেঞ্জার অ্যাড একটি ইন্টারেস্টিং বিজ্ঞাপন ফরম্যাট। মেসেঞ্জারে ডিরেক্ট মেসেজ আসলে যেমন দেখা যায় ঠিক তেমনি মেসেঞ্জার অ্যাড দেখতে। একই রকম হওয়ায় এই অ্যাডে ক্লিক পরার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেড়ে যায়।
স্লাইডশো অ্যাডঃ স্লাইডশো অ্যাড অনেকটা ক্যারোসেল অ্যাডের মতই। তবে স্লাইডশো অ্যাডে শুধু ইমেজ ব্যবহার করা যায়। এখানেও ইমেজ গুলো একের পর এক স্লাইড আকারে পরিবর্তন হতে থাকে। এই অ্যাডের বিশেষত্ব হলো স্লাইডশো অ্যাড সহজে তৈরি করা যায়, খরচ কম হয়, প্রি-মেড টেম্পলেট থাকে, স্লো ইন্টারনেটে বেশি কার্যকরী।
কালেকশন অ্যাডঃ কালেকশন অ্যাড Instant Storefront, Instant Lookbook, Instant Customer Acquisition এবং Instant Storytelling এই চারটি প্রকারভেদ নিয়ে গঠিত। এখানে এমন ভাবে অ্যাড তৈরি করা হয় যাতে সরাসরি অ্যাড থেকেই কাস্টমার প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পারে।
প্লেএবল অ্যাডঃ আপনি যদি একজন অ্যাপ ডেভেলপার হন এবং ফেসবুকে আপনার অ্যাপ সম্পর্কে বিজ্ঞাপন দিতে ইচ্ছুক হন তাহলে প্লেএবল অ্যাড আপনার জন্য। এই অ্যাড ফরম্যাটে ভিজিটর আপনার অ্যাপের ফিচার দেখতে পারবে। তারা চাইলে অ্যাপটি কিছু সময়ের জন্য ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। গুগল অ্যাডস এর সাথে সাথে ফেসবুক অ্যাডস অ্যাপ ডেভেলপারদের জন্য অনেক ভালো একটি প্লাটফর্ম।
ফেসবুকে অ্যাডস দেওয়ার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে।
কিছু প্রধান কারণ
বিশাল দর্শক: ফেসবুকের 2.91 বিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে, যা এটিকে বিজ্ঞাপনের জন্য একটি বিশাল প্ল্যাটফর্ম করে তোলে।লক্ষ্য নির্ধারণ: আপনি বয়স, লিঙ্গ, আগ্রহ, অবস্থান, এবং আরও অনেক কিছুর ভিত্তিতে আপনার বিজ্ঞাপনের দর্শকদের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন।
বাজেট নিয়ন্ত্রণ: আপনি আপনার প্রচারের জন্য একটি নির্দিষ্ট বাজেট নির্ধারণ করতে পারেন এবং আপনার খরচ ট্র্যাক করতে পারেন।
ফলাফল ট্র্যাকিং: আপনি আপনার প্রচারের ফলাফল ট্র্যাক করতে পারেন এবং দেখতে পারেন যে এটি কতটা কার্যকর।
ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি: ফেসবুক অ্যাডস ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্র্যান্ড, পণ্য, বা পরিষেবার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারেন।
লিড জেনারেশন: ফেসবুক অ্যাডস ব্যবহার করে আপনি সম্ভাব্য ক্রেতাদের কাছ থেকে তাদের যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
ট্র্যাফিক বৃদ্ধি: ফেসবুক অ্যাডস ব্যবহার করে আপনি আপনার ওয়েবসাইট, ল্যান্ডিং পেজ, বা অন্যান্য অনলাইন সম্পদের ট্র্যাফিক বৃদ্ধি করতে পারেন।
বিক্রয় বৃদ্ধি: ফেসবুক অ্যাডস ব্যবহার করে আপনি আপনার পণ্য বা পরিষেবার বিক্রয় বৃদ্ধি করতে পারেন।
সর্বপরি কোন কোম্পানী বা ব্যাবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ফেসবুক অ্যাড ব্যাবহার করে তাদের পন্য বা সেবা খুব সহজে টার্গেটেড কাস্টমারদের কাছে পৌছাতে পারে
কোন মন্তব্য নেই